রেফ্রিজারেটর ও এয়ারকন্ডিশন ব্যবহার এর প্রভাব।
মাহবুবুর রহমান সম্রাট,ঝিনাইদহ
রেফ্রিজারেটর ও এয়ারকন্ডিশন ব্যবহার করে কি আমরা নিরাপদ?
রেফ্রিজারেটর ও এয়ারকন্ডিশন এর অপরিহার্য উপাদান হল হিমায়ক বা গ্যাস। আমাদের ব্যবহৃত এই হিমায়কে রয়েছে ক্ষতিকর উপাদান CFC। এই গ্যাস ব্যবহারে পৃথিবীর বায়োমন্ডলের উষ্ণতা বাড়ে ও ওজন স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ে যায়, বন্যা, খড়া, প্রকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে যায়।
সূর্য থেকে প্রতিদিন আমরা আলো আর তাপ পাই যা পৃথিবীতে আমাদের জীবন যাপন নিশ্চিত করে। কিন্তু এই আলো ও তাপ এর সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর রশ্মি ও আসে, যার সব আমাদের জন্য ভালো নয় বরং ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ক্ষতিকর এসব রশ্মি থেকে আমাদের নিরাপদ রাখে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের মাঝে বিদ্যমান ওজোন গ্যাসের একটি স্তর। কিন্তু মানুষ দৈনন্দিন জীবনে এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করে যাতে এই ওজোন স্তরে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে ঘটে। যেমন এসি, ফ্রিজ,অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র,ইনহেলার বা স্প্রেতে ব্যবহৃত CFC,CTC হেলন অথবা মিথাইল ব্রোমাইড ইত্যাদি। এসব উপাদান ওজোন স্তরের গুরুত্ব ক্রমেই কমিয়ে আনে যার ফলে, সূর্যের বিভিন্ন ক্ষতিকর রশ্মি অবাধে পৃথিবীতে প্রবেশ করতে পারে। অতি বেগুনী রশ্মী মানুষ ও জীবজগতের মারাত্মক ক্ষতি করে। ফসলের উৎপাদন কমিয়ে আনে, পানির নিচের জীবজগতে আঘাত হানে, চোখের ছানি,বিভিন্ন রকমের চর্ম রোগ ও ক্যান্সার এর প্রাধুরভাব বাড়ায়। ওজোন স্তরের এই ক্ষয় প্রতিরোধ করতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ 1987 সালে মন্ট্রিয়াল প্রোটোকল নামে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষর করে। স্বাক্ষর কারী দেশ গুলো মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। 1996 সালে বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তর স্তাপন করে ন্যাশনাল ওজোন ইউনিট, যেটি বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রইভেট কোম্পানি গুলোকে ওজোন স্তরের ক্ষতি হয় এমন উপাদান ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করে। তার পরিবর্তে তুলনামূলক কম ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহার করতে পরামর্শ দেয় এবং উদ্যোগ গ্রহণ করে। ফলে বাংলাদেশ 2010 সালের মধ্যে ওজোন স্তরের জন্য ক্ষতিকর গ্যাস এর ব্যবহার বর্জন করে এবং ওই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারায় 2017 সালে ইউনাইটেড ন্যাশানস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম স্বীকৃতি পায়। এই অর্জনের পর বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণয়ন রোধে এবং শীঘ্রই কিগালি চুক্তিতে অুস্বাক্ষর করতে চলেছে। চুক্তি অনুযায়ী স্বাক্ষরকারী দেশ গুলোর বিশ্ব উষ্ণায়ন প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী 21শে সালের মধ্যে উষ্ণায়নের মাত্রা 0.5 সে.ডিগ্রি কমিয়ে আনতে কাজ করবে। আমরা পারে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধে অবদান রাখতে আপাতত শুধু এ কাজগুলো করি-
১। রুমে ছেড়ে যাওয়ার সময় লাইট, ফ্যান,এসি ও অন্যান্য বিদ্যুৎ সামগ্রী বন্ধ করুন।
২। এসির তাপমাত্রা 25 ডিগ্রি সেলসিয়াস গ্রেড বাতার উপরে রাখুন।
৩। জ্বালানি সাশ্রয়ী পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম ব্যবহার করুন।যেমন এলইডি ভাল্ব,CFC মুক্ত ফ্রিজ ইত্যাদি।
৪। CFC, HFC যুক্ত গ্যাস নির্গমনে অধিকতর সতর্ক থাকা। বায়োমন্ডলে এ ধরনের ক্ষতিকর গ্যাস ছেড়ে না দিয়ে গ্যাস রিকভারি করুন।