বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আপোষহীন সৈনিক আব্দুর রহিম
অর্থের অভাবে বিনা চিকিৎসায় পঙ্গুত্ব বরণ করার পথে
—————————————————————————–
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু উপজেলার কাপাসহাটিয়া ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী শীতলী গ্রামের মরহুম আব্দুল করিমের পুত্র আব্দুর রহিম। সত্তরের কোটায় বয়স পৌঁছালেও আজও বয়স্ক ভাতাসহ সরকারি কোন অনুদান জোটেনি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আপোষহীন যোদ্ধা আব্দুর রহিমের ভাগ্যে।
৬৮ সাল থেকে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শ বুকে ধারণ করে তিনি ঢাকা, চট্রগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, গোপালগঞ্জ, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কখনো পায়ে হেটে, কখনো বা গাড়িতে করে প্রিয় নেতার ভাষন শুনতে ছুটে বেড়িছেন গ্রাম-গঞ্জ- শহরে- বন্দরে। ঘাতকদের নির্মম বুলেটে প্রিয় নেতার শাহাদত বরণের পর নিজ দল আওয়ামীলীগের চরম দূর্দিনেও কখনো বৈষয়িক সুবিধার জন্য নীতিভ্রষ্ট হয়ে বিপরীত বলয়ের ভিন্ন দলের কারু কাছে হাত পাতেননি তিনি। আর এই আপোষহীনতার কারণে অনাহারে -অর্ধাহারে কেটেছে তার অনেক দিবস রজনী। ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলার শিকার হয়ে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যাওয়া নেত্রীর মিটিং এ শরীক হয়ে ছিলেন তিনি হৃদয়ের ব্যাকুলতার টানে। এত অজপাড়া গাঁ থেকে দলের সঙ্কটময় মূহুর্তে জীবন বাজি রেখে উক্ত মিটিং এ শরীক হয়ে দলের প্রতি ভালবাসার এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন তিনি। এই ত্যাগী কর্মীটি পারত পক্ষে নিজের দৈন্যতার কথা প্রকাশ করতে নারাজ আত্মভিমানী বুনেদী পরিবারের মানুষ হিসেবে। অতি কাছের কোন স্বজন তার অসহায়ত্ব উপলব্ধি করে কোন কিছু নীরবে প্রদান করলে তা উপেক্ষা করেন না।
সমসাময়িক কালে চারটার্মে প্রায় দেড় যুগ ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ সরকার পরিচালনা করলেও আব্দুর রহিমের মত আপোষহীন ত্যাগী কর্মীর মূল্যায়ন করতে এগিয়ে আসেনি দলের কোন স্তরের নেতৃবৃন্দ। বয়সের ভারে নুঝ্য জীর্ণশীর্ণ দেহ নিয়ে গাড়ি থেকে নামতে যেয়ে আজ থেকে সাত মাস পূর্বে কমরের কটি খসে যায় এই আজীবন আওয়ামী লীগ প্রেমী মানুষটির। ডাক্তার দেখালে চল্লিশ হাজার টাকা অপারেশনসহ চিকিৎসায় ব্যয় হবে শুনে আর ডাক্তারের কাছে যেতে পারেননি অর্থের অভাব। পার্শ্ববর্তী গ্রামের কবিরাজের গাছ বাঁধাকে সম্বল করে কাঠো দুটি ক্রাচের উপর ভর দিয়ে পঙ্গত্ব বরণ করেই আপন মনে গেয়ে বেড়ান ডিজিটাল বাংলার জয়গান।
অর্ধশতাব্দীর অধিক কাল ধরে ভালবাসার একমাত্র প্রতীক নৌকায় সিল প্রদানকারী আব্দুর রহিম এখন জীবন সায়াহ্নে উপনীত। বর্তমানে প্রত্যাশা, আশা ভরসার একমাত্র ঠিকানা প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা তার অবশিষ্ট জীবনে একটুখানি স্বস্তি-শান্তি আর নিরাপত্তার সাথে বাঁচার জন্য সুচিকিৎসা, একটি গৃহ এবং খেয়ে পরে টিকে থাকার মত অবলম্বন গড়ে দিবেন এমনটিই আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
মাহবুব মুরশেদ শাহীন, হরিনাকুন্ডু, ঝিনাইদহ। ০১৬০৯৬১৯৭৩০, ১৩/০৮/২১