ঝিনাইদহে নির্বাচনের মাঠে মায়ের প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়ে

1122
মায়ের প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়ে !!!
ঝিনাইদহ অনলাইনঃ
মা-মেয়ের একই বাড়িতে বসবাস, এক পরিবারেই চলে সকল কাজ। কিন্তু ভিন্নতা শুধু ভোটের মাঠে। মা-মেয়ের একই পদের ভোটযুদ্ধে এমন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে। এখানে মায়ের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন মেয়ে। ওই ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৭.৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডে এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তারা দুজনেই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। মা ও মেয়ের বাড়ি ওই ইউনিয়নের চাপরাইল গ্রামে। তাদের মধ্যে মা হুরজান বেগম বর্তমান ওই ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রয়েছেন। পদটিতে আগামী ২৪ নভেম্বরের নির্বাচনেও তিনি প্রার্থী হয়েছেন। আবার মেয়ে আজিজার খাতুনও মায়ের প্রতিপক্ষ প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মা- মেয়ে একই পদের প্রার্থী হলেও কেউ কারও ছাড় দিতে নারাজ। ফলে ওই ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্যের ভোটযুদ্ধে বাড়তি মাত্রা যোগ হয়েছে। মেয়ে আজিজার খাতুন জানান, বিগত নির্বাচনে আমি প্রার্থী হতে চেয়েছিলাম। মা আমাকে বলেছিলেন পরবর্তী নির্বাচনে মা আমার জন্য ছাড় দেবেন। কিন্তু দেখলাম তফসিল ঘোষণার পর কথা ঠিক না রেখে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ফলে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এ বছর আমি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকবো। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট ভিক্ষা ও গণসংযোগ করছি। তিনি বলেন, আমার কাছ থেকে মনোনয়নপত্র ছিনতাই করার পায়তারা করলে পরে পুলিশের সহযোগিতায় তা জমা দিয়েছি। এদিকে মেয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মা হুরজান বেগম জানান, আমি বর্তমানে ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আমি রাতদিন সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। আমার ওয়ার্ডের ভোটাররা আমাকে সমর্থন দিয়েছে তাই ভোটে নেমেছি। তিনি দুঃখ করে বলেন, আজ থেকে ২৭ বছর আগে আমি স্বামী পরিত্যক্ত হয়েছি। এরপর একটা ছেলে ও মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়েছি। কিন্তু আমার বিপক্ষে মেয়ে প্রার্থী হয়েছে। আত্মীয় স্বজনরা বহুবার বুঝিয়েছে। কিন্তু কারও কথা সে শুনছে না। সেও ভোট ভিক্ষায় নেমে গেছে। আমি সাফ জানিয়ে দিয়েছি ভোটের জন্য আমি প্রস্তুত আছি। সে কারণেই আমি ভোটের জন্য গণসংযোগ করে যাচ্ছি। একই পদে মায়ের প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়ে হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলে মা হুরজান বেগম জানান, ইউনিয়নের সব মানুষ আমার ভালো চায় না। কিছু মানুষ আমার ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য মেয়েকে আমার প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। তবে এখনও চেষ্টা করছি তাকে নির্বাচন থেকে বসিয়ে দেয়ার জন্য। হুরজান বেগমের ছেলে সাজ্জাদুল ইসলাম জানান, একদিকে মা অন্যদিকে বোন একই পদের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এটা নিজের কাছেই খারাপ লাগছে। আমরা প্রথম থেকে দুজনকে নিয়ে বসেছি সমাধানের জন্য। কিন্তু কোনো ফল আসেনি। তারা যার যার সিদ্ধান্তে অটল। আমি মনে করি ভোট করার অধিকার সব নাগরিকদের আছে। জোর করে বসিয়ে দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। তারপরও তাদের মীমাংসার জন্য শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here